চাপবলয় ও বায়ুচাপ
অধ্যায়ভিত্তিক সংজ্ঞা:
1. বায়ুর চাপ: বায়ুর ওজন থাকায় বায়ু পৃথিবীপৃষ্ঠে চাপ প্রয়োগ করে, একেই বায়ুর চাপ বলে।
2. বায়ুচাপ বলয় : পৃথিবীপৃষ্ঠের ওপর নির্দিষ্ট দূরত্বে অক্ষাংশ বরাবর সমধর্মী বায়ুস্তর বলয়ের আকারে পৃথিবীকে বেষ্টন করে আছে। এগুলিকেই বায়ুচাপ বলয় বলে।
3. নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়: নিরক্ষীয় অঞ্চলে 0°-5° অক্ষরেখার মধ্যে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয় অবস্থিত।
4. নিরক্ষীয় শান্তবলয় বা ডেলিড্রামস: নিরক্ষীয় অঞ্চলে বায়ু উষ্ণ এবং হালকা হয়ে ওপরে উঠে যায়। ফলে বায়ুর উধ্বমুখী স্রোত লক্ষ করা যায় এবং ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে কোনাে বায়ু প্রবাহিত হয় না। এজন্য এই অঞ্চলে শান্তভাব বিরাজ করে। তাই এই অঞ্চলকে নিরক্ষীয় শান্তবলয় বা ডােলড্রামস বলে।
5. কর্কটীয় এবং মকরীয় উচাপ বলয়: উত্তর ও দক্ষিণ গােলার্ধে 25-35° অক্ষাংশের মধ্যে যথাক্রমে কর্কটীয় এবং মকরীয় উচ্চচাপ বলয় গঠিত হয়েছে।
6. অশ্ব অক্ষাংশ: দুই ক্রান্তীয় অঞ্চলের 25-35° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশকে অশ্ব অক্ষাংশ বলে।
7. বায়ুপ্রবাহ: বায়ুচাপের সমতা রক্ষার জন্য বায়ু সবসময় উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে নিম্নচাপ অঞলের দিকে প্রবাহিত হয়। একেই বায়ুপ্রবাহ বলে।
8. বায়স্রোত: ভূপৃষ্ঠের ওপর বায়ুর উল্লম্ব চলাচল হল বায়ুস্রোত।
9. কোরিওলিসবল (Coriolis Force): পৃথিবীর ঘূর্ণনের কারণে পৃথিবীপৃষ্ঠস্থ যে-কোনাে স্বাভাবিক গতিশীল বস্তুর ওপর এক বিশেষ ধরনের বল কাজ করে। এর ফলে বস্তুর দিকবিক্ষেপ ঘটে। এই বলের নাম কোরিওলিস বল।
10. নিয়ত বায়ু: সারাবছর ধরে যে বায়ু নিয়মিতভাবে ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে একই দিকে, একই গতিবেগে প্রবাহিত হয়, তাকে নিয়ত বায়ু বলে। নিয়ত বায়ু তিনপ্রকার-আয়ন বায়ু, পশ্চিমা বায়ু এবং মেরু বায়ু।
11. অয়ন বায়ু : কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে সারাবছর নিয়মিতভাবে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত বায়ুর নাম আয়ন বায়ু। এই বায়ু বাণিজ্য বায়ু নামেও পরিচিত।
2. বায়ুচাপ বলয় : পৃথিবীপৃষ্ঠের ওপর নির্দিষ্ট দূরত্বে অক্ষাংশ বরাবর সমধর্মী বায়ুস্তর বলয়ের আকারে পৃথিবীকে বেষ্টন করে আছে। এগুলিকেই বায়ুচাপ বলয় বলে।
3. নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়: নিরক্ষীয় অঞ্চলে 0°-5° অক্ষরেখার মধ্যে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয় অবস্থিত।
4. নিরক্ষীয় শান্তবলয় বা ডেলিড্রামস: নিরক্ষীয় অঞ্চলে বায়ু উষ্ণ এবং হালকা হয়ে ওপরে উঠে যায়। ফলে বায়ুর উধ্বমুখী স্রোত লক্ষ করা যায় এবং ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে কোনাে বায়ু প্রবাহিত হয় না। এজন্য এই অঞ্চলে শান্তভাব বিরাজ করে। তাই এই অঞ্চলকে নিরক্ষীয় শান্তবলয় বা ডােলড্রামস বলে।
5. কর্কটীয় এবং মকরীয় উচাপ বলয়: উত্তর ও দক্ষিণ গােলার্ধে 25-35° অক্ষাংশের মধ্যে যথাক্রমে কর্কটীয় এবং মকরীয় উচ্চচাপ বলয় গঠিত হয়েছে।
6. অশ্ব অক্ষাংশ: দুই ক্রান্তীয় অঞ্চলের 25-35° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশকে অশ্ব অক্ষাংশ বলে।
7. বায়ুপ্রবাহ: বায়ুচাপের সমতা রক্ষার জন্য বায়ু সবসময় উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে নিম্নচাপ অঞলের দিকে প্রবাহিত হয়। একেই বায়ুপ্রবাহ বলে।
8. বায়স্রোত: ভূপৃষ্ঠের ওপর বায়ুর উল্লম্ব চলাচল হল বায়ুস্রোত।
9. কোরিওলিসবল (Coriolis Force): পৃথিবীর ঘূর্ণনের কারণে পৃথিবীপৃষ্ঠস্থ যে-কোনাে স্বাভাবিক গতিশীল বস্তুর ওপর এক বিশেষ ধরনের বল কাজ করে। এর ফলে বস্তুর দিকবিক্ষেপ ঘটে। এই বলের নাম কোরিওলিস বল।
10. নিয়ত বায়ু: সারাবছর ধরে যে বায়ু নিয়মিতভাবে ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে একই দিকে, একই গতিবেগে প্রবাহিত হয়, তাকে নিয়ত বায়ু বলে। নিয়ত বায়ু তিনপ্রকার-আয়ন বায়ু, পশ্চিমা বায়ু এবং মেরু বায়ু।
11. অয়ন বায়ু : কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে সারাবছর নিয়মিতভাবে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত বায়ুর নাম আয়ন বায়ু। এই বায়ু বাণিজ্য বায়ু নামেও পরিচিত।
12. আন্তঃক্রান্তীয় অভিসরণ অঞ্চল(Inter Tropical Convergence Zone বা ITCZ): উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু নিরক্ষীয় অঞলে মিলিত হয়। এই স্থানই আন্তঃক্রান্তীয় অভিসরণ অঞ্চল বা ITCZ নামে পরিচিত। এই অঞলের আর-এক নাম নিরক্ষীয় শান্তবলয়।
13. পশ্চিমা বায়ু : কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে সুমেরুবৃত্ত ও কুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত নিয়ত বায়ুর নাম পশ্চিমা বায়ু। এই বায়ু 35° থেকে 60° অক্ষরেখার মধ্যবর্তী অঞ্চলে প্রবাহিত হয়।
14. মেরু বায়ু : এই শুষ্ক ও শীতল বায়ু উভয় গােলার্ধে 70-80° অক্ষরেখার মধ্যে মেরুদেশীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে মেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে সারাবছর ধরে প্রবাহিত হয়।
15. সাময়িক বায়ু: দিন ও রাতের কোনাে-এক সময়ে কিংবা বছরের কোনাে-একটি নির্দিষ্ট ঋতুতে প্রবাহিত বায়ু হল সাময়িক বায়ু।
16. সমুদ্রবায়ু : দিনেরবেলা সমুদ্রভাগ থেকে স্থলভাগের দিকে প্রবাহিত বায়ুপ্রবাহই হল সমুদ্রবায়ু। বিকেল বা সন্ধের দিকে সমুদ্র বায়ুর গতিবেগ সর্বাধিক হয়।
17. স্থলবাযু : রাত্রিবেলা স্থলভাগ থেকে সমুদ্রের দিকে স্থলবায়ু প্রবাহিত হয়। ভােররাতে এই বায়ুর গতিবেগ বেড়ে যায়।
18. অ্যানাবেটিক ও ক্যাটাবেটিক বায়ু : দিনেরবেলা পার্বত্য উপত্যকার মধ্য দিয়ে উষ্ণ ও হালকা বায়ু ওপরে উঠে আসে। একে অ্যানাবেটিক বায়ু বা উপত্যকা বায়ু বলে। রাত্রিবেলা পর্বতের ঢাল বরাবর ঠান্ডা ভারী বাতাস নীচে নেমে যায়। এই পার্বত্য বায়ুর নাম ক্যাটাবেটিক বায়ু বা পার্বত্য বায়ু।
19. স্থানীয় বায়ু : পৃথিবীর নানা অঞ্চলে বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় কারণে প্রবাহিত বায়ু হল থানীয় বায়ু। যেমন—রকি পার্বত্য অঞ্চলের উষ্ণ বায়ু চিনুক, আড্রিয়াটিক সাগরের উপকূলবর্তী অঞ্চলের শীতল বায়ু বােরা, লিবিয়া মরুভূমির উষ্ণ ও ধূলিপূর্ণ বায়ু সিরক্কো, ভারতের উষ্ণ বায়ু লু ও আঁধি।
20. আকস্মিক বায়ু : পৃথিবীপৃষ্ঠে স্বল্প পরিসর স্থানে বায়ুচাপের পার্থক্যের কারণে হঠাৎ করে অনিয়মিতভাবে বায়ু প্রবাহিত হয়। এর নাম আকস্মিক বায়ু। যেমন—ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘূর্ণবাত।
ব্যাখ্যামূলক উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলী:
১. বায়ুচাপের তারতম্যের কারণগুলি আলােচনা করাে।
১. বায়ুচাপের তারতম্যের কারণগুলি আলােচনা করাে।
উঃ তারতম্যের কারণগুলি হল—
1. বায়ুর উষ্ণতা : বায়ু উয় হলে প্রসারিত ও হালকা হয়, ফলে বায়ুর ঘনত্ব কমে যায়। অর্থাৎ বায়ুর চাপ হ্রাস পায়। এই কারণে নিরক্ষীয় অঞ্চলে বায়ুর চাপ কম হয়। আবার, বায়ুর উয়তা কমলে বায়ু সংকুচিত হওয়ায় ঘনত্ব বাড়ে। সুতরাং, বায়ুর চাপও বৃদ্ধি পায়। উভয় মেরু অঞলেই অতিরিক্ত ঠান্ডার জন্য বায়ুর চাপ বেশি হয়।
2 বায়ুতে জলীয় বাষ্পের উপস্থিতি: জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু শুষ্ক বায়ুর তুলনায় হালকা, ফলে এই বায়ুর চাপও কম। এজন্য যেসব অঞ্চলের বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকে, সেখানে বায়ুর চাপ কম হয়। অপরপক্ষে, বায়ুতে উপস্থিত জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কম হলে বায়ু শুষ্ক হয় ও সেখানে উচ্চচাপ বিরাজ করে। এই কারণে নিরক্ষীয় অঞলে বায়ুর চাপ কম কিন্তু , মেরু অঞ্চলে জলীয় বাষ্পের অভাবে বায়ুর চাপ অনেক বেশি।
3. কোনাে স্থানের উচ্চতা : সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে যতই ওপরের দিকে ওঠা যায়, ততই বায়ুস্তরের গভীরতা বা ঘনত্ব ও ওজন কমে যায়। এর ফলে বায়ুর চাপ হ্রাস পায়। এজন্য দুটি স্থানের মধ্যে যেটির উচ্চতা বেশি, সেখানে বায়ুর চাপ অপেক্ষাকৃত কম হয়।
4. পৃথিবীর আবর্তন গতি : পৃথিবীর আবর্তন গতির জন্যও বায়ুর চাপের তারতম্য হয়। যেমন—পৃথিবীর আবর্তনের গতিবেগ দুই মেরুর তুলনায় মেরুবৃত্তপ্রদেশে বেশি। ফলে মেরুবৃত্তপ্রদেশের বায়ু বেশি পরিমাণে বিক্ষিপ্ত হয়। এর ফলে বায়ুর ঘনত্ব কমে গিয়ে মেরুবৃত্ত প্রদেশে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়।
5. বায়ুমণ্ডলের ঘনত্ব: ভূপৃষ্ঠের ওপর সর্বত্র বায়ুমণ্ডলের ঘনত্ব বা গভীরতা সমান নয়। ভূপৃষ্ঠে যে জায়গায় বায়ুমণ্ডলের গভীরতা বেশি সেখানে বায়ুর চাপ বেশি। আবার যে অঞলে বায়ুর গভীরতা কম সেখানে বায়ুর চাপ কম হয়।
6. জলভাগ ও স্থলভাগের বণ্টন: বায়ুর চাপ অনেকাংশে ভূপৃষ্ঠে জলভাগ ও স্থলভাগের বণ্টনের ওপর নির্ভর করে। জলভাগের ওপর দিয়ে যে বায়ু প্রবাহিত হয় তা আর্দ্র এবং হালকা হয়। তাই সেই আর্দ্র বায়ুর চাপ কম থাকে। অন্যদিকে, স্থলভাগের ওপর দিয়ে যে বায়ু প্রবাহিত হয় তা শুষ্ক থাকে বলে ভারী হয়। সেই বায়ুর চাপও বেশি হয়।
২. চিত্র-সহ পৃথিবীর বায়ুচাপ বলয়গুলির পরিচয় দাও।
উঃ পৃথিবীর বায়ুচাপ বলয়সমূহ —
উয়তার তারতম্য, উচ্চতা, বায়ুতে জলীয় বাষ্পের উপস্থিতি, পৃথিবীর আবর্তন গতি, বায়ুমণ্ডলের ঘনত্বের তারতম্য প্রভৃতির ওপর ভিত্তি করে পৃথিবীতে মােট সাতটি চাপ বলয়ের সৃষ্টি হয়েছে। এগুলি হল— 1. নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়, 2. কর্কটীয় উচ্চচাপ বলয়, 3. মকরীয় উচ্চচাপ বলয়, 4. সুমেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়, 5. কুমেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়, 6. সুমেরু উচ্চচাপ বলয় এবং 7. কুমেরু উচ্চচাপ বলয়।
1. নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়: অক্ষাংশগত বিস্তৃতি: নিরক্ষরেখার উভয়দিকে 10° উত্তর ও 10° দক্ষিণ অক্ষরেখার মধ্যবর্তী অঞ্চলে সারাবছর বায়ুর নিম্নচাপ দেখা যায়। এই অঞ্চলটির নাম নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয় বা নিরক্ষীয় শান্ত বলয় বা ডােলড্রামস। সৃষ্টির কারণ: প্রধানত তিনটি কারণে এই নিম্নচাপ বলয়টির সৃষ্টি হয়েছে 1. এই অঞ্চলে সূর্যরশ্মি সারাবছর লম্বভাবে পড়ে বলে বায়ু সারাবছরই উয় ও হালকা থাকে, তাই বায়ুর চাপ কম হয়; 2. এখানে স্থলভাগের চেয়ে জলভাগ বেশি বলে বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণও বেশি। অধিক জলীয় বাষ্পের কারণে বায়ুর চাপ কম হয়; 3. নিরক্ষরেখায় পৃথিবীর আবর্তনের গতিবেগ বেশি বলে নিরক্ষীয় অঞ্চলের বায়ু ওপরে উঠে উত্তর ও দক্ষিণে ছিটকে যায়। এর ফলে বায়ুর ঘনত্ব কমে যায় এবং নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়।
2. কর্কটীয় ও 3. মকরীয় উচ্চচাপ বলয় : অক্ষাংশগত বিস্তৃতি : নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের উভয়দিকে 25° থেকে 35° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষরেখার মধ্যে বায়ুমণ্ডলে যে দুটি উচ্চচাপ বলয়ের উপস্থিতি লক্ষ করা যায় তাকে ক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় বলে। এই ক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় উত্তর গােলার্ধে কর্কটীয় উচ্চচাপ বলয় এবং দক্ষিণ গােলার্ধে মকরীয় উচ্চচাপ বলয় নামে পরিচিত। সৃষ্টির কারণ: 1. নিরক্ষীয় অঞ্চলের উয় ও আর্দ্র বায়ু ক্রমশ ওপরে উঠে ঠান্ডা ও ভারী হয়ে পৃথিবীর আবর্তন গতির জন্য উত্তর এবং দক্ষিণে ছিটকে যায়। পরে তা ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়ে 25° থেকে 35° অক্ষরেখা বরাবর নীচের দিকে নেমে আসে। 2. পৃথিবীর জন্য সৃষ্ট কোরিওলিস বলের প্রভাবে দুই মেরু অঞ্চল থেকে যে ঠান্ডা ও ভারী বাতাস নিরক্ষীয় অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়, তারও কিছু অংশ এখানে আসে। এই দুটি কারণে উভয় গােলার্ধে 25° থেকে 35° অক্ষরেখার মধ্যে বায়ুর ঘনত্ব বেড়ে গিয়ে উচ্চচাপ সৃষ্টি হয়।
4. সুমেরুবৃত্তপ্রদেশীয় ও 5. কুমেরুমেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়: অক্ষাংশগত বিস্তৃতি: দুই মেরুবৃত্তপ্রদেশের নিকটবর্তী অঞ্চলে অর্থাৎ উভয় গােলার্ধে 60° থেকে 70° অক্ষরেখার মধ্যে যে নিম্নচাপ বলয় দুটি অবস্থান করে তাকে মেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয় বলে। এই নিম্নচাপ বলয় উত্তর গােলার্ধে সুমেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয় এবং দক্ষিণ গােলার্ধে কুমেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয় নামে পরিচিত। সৃষ্টির কারণ : 1. পৃথিবীর আবর্তন বেগ মেরু অঞ্চলের তুলনায় মেরুবৃত্তপ্রদেশে বেশি। ফলে এই অঞ্চলে বায়ু বেশি বিক্ষিপ্ত হয়; 2. মেরু অঞ্চলের তুলনায় মেরুবৃত্ত অঞ্চলের ভৌগােলিক বিস্তৃতি এবং উন্নতা বেশি হওয়ায় দুই মেরু অঞ্চল থেকে বায়ুপ্রবাহ মেরুবৃত্ত অঞ্চলে পৌঁছে আয়তনে বেড়ে যায়।
6. সুমেরু ও 7. কুমেরু উচ্চচাপবলয় :অক্ষাংশগত বিস্তৃতি: উভয় গােলার্ধের 80 থেকে 90° অক্ষাংশের মধ্যে অবস্থিত উচ্চচাপ বলয় দুটিকে মেরুদেশীয় উচ্চচাপ বলয় বলে। এর উত্তর গােলার্ধের অংশটিকে সুমেরু উচ্চচাপ বলয় এবং দক্ষিণ গোলার্ধের অংশটিকে কুমেরু উচ্চচাপ বলয় বলা হয়। সৃষ্টির কারণ: (1) দুই মেরু অঞ্চলে প্রচণ্ড ঠান্ডার জন্য বাতাস সবসময় ঠান্ডা ও ভারী থাকে। (2) সূর্যরশ্মি তির্যকভাবে পড়ে বলে বাষ্পিভবন খুব কম হয়। ফলে বায়ুতে জলীয় বাষ্প কম থাকে। (3) পার্শ্ববর্তী মেরুবৃত্ত অঞ্চলের নিম্নচাপ বলয় থেকে যে বায়ু পৃথিবীর আবর্তনের কারণে ওপরে ওঠে, তার কিছু অংশ শীতল ও ভারী হয়ে মেরু অঞ্চলে নেমে আসে।
এই তিনটি কারণে দুই মেরু সংলগ্ন এলাকায় বায়ুর ঘনত্ব বেশি হয়, ফলে চাপও বেশি হয়।
সাইটে সমস্যার জন্য পরবর্তী প্রশ্নোত্তর আপাতত বাতিল করা হয়েছে। আমরা শীঘ্রই প্রশ্নোত্তরগুলি প্রদান করবো।
0 Comments